নতুন কবিবুশরা হাবিবা

যাযাবর

যাযাবর – বুশরা হাবিবা
এই পুরো শহরটাই আমার একটা ঘর ছিলো,
আমার নিজের ঘর!
যে ঘরের প্রতিটা কোণায় আমি তোর গন্ধ খুঁজে পেতাম জানিস তো?
আমার হোস্টেলের বদ্ধ রুমটায় বসে আমি ধরে নিতাম তোর নিঃশ্বাসটুকু বাতাসে ভেসে ঠিকই আমার কাছে আসে!
মাঝরাতে সবাই ঘুমিয়ে গেলে আমি বুঝে নিতাম তুইও ঘুমোচ্ছিস কোথাও একটা খুব কাছে।
তোকে দেখার জন্য চোখ জ্বালা করতেই আমি ছুটে রাস্তায় চলে যেতাম,
যে পথে তুই হাঁটিস সে পথে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতাম।
কত বেলা তোকে একটু ছুঁয়ে দেখবো বলে তোর কাজের জায়গাটায় লুকিয়ে গিয়েছি জানিস?
দূর থেকেও ছুঁয়ে দেয়া যায়,
কাছে না যেয়েও ভীষণ কাছে যাওয়া যায়।
এইযে আমায় কখনোই ভালোবাসি বলিসনি তবুও কি ভীষণ ভালোবেসে গিয়েছি।
এ শহরটাকে আমি আমার আর তোর ভালোবেসে বাঁধা একটা ঘরই ভাবতাম।
নিজের ঘরের ইট সুড়কির মতোই এই শহরের প্রতিটা ধূলো কণাকে ভালোবাসতাম!
বেলা ফুরোতেই দেখি-
এ শহরে সবাই তোর আপন একা আমিই শুধু পর,
এ শহরে আমি নই অন্য কেউকে নিয়েই তোর ঘর।
৫৬৫ বর্গমাইলের এ শহরে আমি বেঁধেছিলাম আমার ঘর,
ভুলটুকু ভাঙতেই দেখি এ শহরে আসলে আমি অবাঞ্ছিত, অযাচিত, ভীষণ ভীষণ পর।
তোর শহরে আমি উদ্বাস্তু হয়েই পড়ে রইলাম,
যাযাবরের জীবনে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখা যে হৃদয়ে আজ ভাঙনের গান বাঁধলাম –
তার দিব্যি সে গানের প্রতি চরণে আমি শুধুই তোর নামে তোলা অগণিত দীর্ঘশ্বাস মিশিয়ে দিলাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *