নতুন কবিসুলতানা পারভীন সুমি

ভালো থেকো ভালো রেখো

কেমন আছো শুভ্র?
অবশ্য তোমার ভালো থাকারই কথা।
এখনও কি অফিস থেকে রোজ রাত করে ফেরো?
আগে তো প্রায় সময় অফিসেই থেকে যেতে।
কিছু বললেই বলতে, শোন কাজের অনেক চাপ এসব তুমি বুঝবে না।
তুমি ঠিকই বলতে শুভ্র আমি কখনোই কিছু বুঝে উঠতে পারিনি।
শুনলাম, ফের বিয়ে করেছো!
শহরের নাম করা ব্যবসায়ীর শিক্ষিতা,সুন্দরী মেয়েকে
সে কি তোমার জন্য খাবার টেবিলে বসে থাকে?
মাঝরাত অবধি!
না খেয়ে।
হয় তো আজকাল তোমার কাজের চাপটা কমে গেছে।
তোমাকে কত বার বলেছিলাম, শুভ্র
সিগারেটটা তো বাহিরেও খাওয়া যায়
আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
অমনি তোমার চিৎকার, চেচামেচি সেকি প্রচন্ড রাগ।
তুমি বলতে, যত্তসব ঢং।
বাবা মা চলে যাবার পর চাচী অনেক খাটিয়েছিল,
তখন আমার সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিল পানি
ব্যাস, বুকে কফ জমে জমে
যাক সেসব, তোমার স্মার্ট বড়লোক বউ নিশ্চয় কর্পোরেট অফিসের লোকজনদের সাথে,
হরহামেশাই ইংরেজিতে কথা বলে!
এখন হয় তো তোমার নিজেকে আর ছোট মনে হয় না।
আমি আন্ডারগ্রাজুয়েট ছিলাম বাংলা সাহিত্যে।
কতবার চাচাকে বলেছিলাম,
চাচা আমি পড়তে চাই, আমায় পড়তে দাও,পড়তে দাও।
কে শোনে কার কথা।
সেসময় আমার লেখার হাত নিয়ে আমি ভীষণ প্রশংসিত ছিলাম, স্যারদের কাছে।
অনেকে ধরেই নিয়েছিলো, হয় তো একদিন কবি হবো।
তোমার মত যোগ্য ছেলে পাওয়া নাকি ভাগ্যের ব্যাপার,
আমার অলিক দুয়ার যে এভাবে খুলে যাবে সত্যিই বুঝে উঠতে পারিনি শুভ্র।
বিয়ের পর তো তোমার মা পড়তেই দিলেন না
ঘরের বউ পড়লে নাকি জাত যাবে
গ্রাজুয়েট টুকু অসম্পূর্ণই রয়ে গেলো।
তবুও রোজ কেন আমায় অশিক্ষিত, মূর্খ,ভিখারি বলে, যাতা বলতে শুভ্র? কেন?
এখনও কি জুতো পরেই রাতে ঘুমিয়ে যাও?
কী যে বাজে স্বভাব ছিল তোমার।
কত দিন বলেছিলাম তোমায়, শুভ্র শহরের এ বন্দী জীবন আমায় ভীষণ অস্বস্তি দেয়
কোন এক ছুটি তে আমায় নদী দেখাতে নিয়ে যাবে?
তুমি বলতে টিকিট কেটে দিচ্ছি চাচার বাড়িতে যাও।
তোমায় সাথে নিয়ে আমার নদী দেখা হয়নি,
বিকেলে দুজনে বসে সুখদুঃখের কথপোকথন হয় নি,
তুমি তো আমায় ঠিক ভাবে কখনো দেখোই নি।
আজ কাল তোমার খোঁজ নেই না তেমন।
ভুলে গেছি অতীত যন্ত্রণা।
“শুধু চাইবো, ভালো থেকো শুভ্র
প্রিয় মানুষটিকে ভালো রেখো”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *