জান্নাতুন নুর দিশানতুন কবি

ভালোয় বাঁচা

জান্নাতুন নুর দিশা

যে মঞ্চে কবি এবং নেতা একসাথে বসে থাকেন,
সেই মঞ্চকে আমি ঘৃণা করি।
কবি এবং নেতা কখনো এক মঞ্চে থাকতে পারেন না! অথচ এখন নেতা দিব্যি কবি হয়ে যান
কবি সেজে যান নেতা!
মাঝেমাঝে ইচ্ছে হয় খুলতে শুরু করি!
লেবাসের পর লেবাস
মিথ্যের পর মিথ্যে
অতলে হাতড়ে খুঁজি মনুষ্যত্ব!
শিল্পীকে আমি ভালোবেসে ফুল দিয়েছিলাম,
তার পাপড়ি উড়তে দেখিছি শিল্পপতির গাড়ির উড়িয়ে যাওয়া ধুলোয়।
ওভাবেই আজকাল টাকাও ওড়ে
গ্যালারিতে, এক্সিবিশনে, সুসজ্জিত ড্রইং রুমে।
টাকার গন্ধ কে না ভালোবাসে!
ফুলের গন্ধও তো বিক্রি হয় টাকার দামে।
নিখিলের ভালোবাসাও তো বিকিয়ে গিয়েছিল
প্রৌঢ়ার বয়স্ক দেহের ভাঁজে।
তখন থেকে আসমানি রঙে আমার তীব্র অবিশ্বাস।
ক্লান্তি পেলে তবু আসমানে তাকাই।
সূর্যের ঝাঁজে চোখ পুড়ে যায়।
তাই আজকাল জল পাই না চোখে।
হিল জুতা দিয়ে মাড়িয়ে চলে যাওয়া মেয়েটার গায়ের -কোথাও না কোথাও কি এখনো মাটির গন্ধ নেই?
নেই হয়ত। এ গন্ধ সরাতে তাকে কতবার পঙ্কিল করতে হয়েছে নিজের বোধ
ভাবতে গেলেই শিউরে উঠি।
নাগরিক রাস্তায় সস্তা ওড়না গায়ে হাঁটা দুআনার চাকুরের অতশত অবশ্য ভাবতে নেই।
পত্রিকার বিনোদন পাতায় বারবার ঘুরেফিরে চোখ রাখা ভদ্রলোক শুনলাম পাড়ার মোড়ে ভাষণ দিচ্ছে,
“মেয়ে মানুষ সব উচ্ছন্নে গেল”।
ভুল অবশ্য কিছু বলে নি।
উচ্ছন্নে কে না গেছে!
উচ্ছন্নে যাওয়া কালের ধ্বনি কানে বাজে।
কানে বাজে উচ্ছন্নে না যাওয়া মেয়েটার চিৎকার, “আমাকে বাঁচাও, আমাকে বাঁচাও!”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *