প্রজন্ম
প্রজন্ম – সুনীতি দেবনাথ
ইউক্যালিপটাসের সরু দীঘল পাতা পিছলে
সকালের চৈতী রোদ্দুর ছলকে ঝাঁপিয়ে পড়লো
টংঘরের দুয়ারে চিত্রার্পিত ধনবতী রিয়াংএর পেটে।
চার চারটে সুদীর্ঘ দিন রাত নৌকো বেয়ে পার হলো
ফেরেনি মরদ চাল নিয়ে উপরের লুসাই বস্তি থেকে,
পেটে জ্বলছে ধনবতীর জুমের আগুন ধিকিধিকি
সারাদিন সারারাত দমকে দমকে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে,
আরেক বিপন্ন নবীন অস্তিত্ব হাত পায়ের সঞ্চালনে
ঘোষণা করেই চলেছে বেরোতে চাই আলোকে,
মোচড়ে মোচড়ে কঁকিয়ে উঠছে নারী বিস্ফারিত চোখ।
তারপর সূর্য যখন প্রখর উত্তপ্ত মাথার উপর —
আদিম জননীর মত ধনবতী রক্তস্রোতে ভাসিয়ে
রক্তাক্ত আবহে একটি শিশু উপহার দিলো
আগামী পৃথিবীর প্রবাহিত জনতার স্রোতে,
কান্নার উতরোলে সে তার আবির্ভাব ঘোষণা করলো,
তার কান্নার চমকে তপ্ত চৈতালি সূর্য উঁকি দিল —
সামনের রক্তিম পলাশ উঁকি দিল., প্রসবের রক্তিম
স্রোতে নিস্পন্দ নিস্প্রাণ জননীর পাশে দেখা গেল
আগামীর রক্তাক্ত ইতিহাস জেহাদে ক্রন্দনে আকুল,
বিষাদে মুখ ফেরালো সূর্য ঝরলো পলাশ গুচ্ছ ।