নারীর জন্য পংক্তিমালা (২)
নারীর জন্য পংক্তিমালা (২) – মাহ্ফুজ রাজন
ও মেয়ে, তুমি অমন কাঁদো কেন ?
রচনা করো কেন অমন
দুঃখী নিঃশব্দের কবিতা ?
তোমার একেকটি কান্নার মুহূর্ত
বিষন্ন করে তোলে চারধার ,
প্রকৃতির বেহালায় বাজে যেন
দূর অতীতের কষ্টের সুর।
নীলাকাশ তখন আর নীল থাকেনা
হয়ে যায় দলা পাকানো কালির রাশি ,
বনভূমির সবুজ পাতাগুলো সব
বিবর্ণ শুষ্ক হয়ে ঝরে পড়ে ,
লুটিয়ে পড়ে বনভূমিতে জোটবদ্ধ হয়ে।
টিয়া ফিঙে কাকাতুয়া আর অন্য পাখিরা
সার বেঁধে তোমার পদযাত্রা দেখে,
ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরে চোখ বেয়ে তাদের
অশ্রুবিন্দু। স্বাগত জানায় তোমার
কষ্টগুলো শুষে নেবার
তাদের দুই লাজুক চঞ্চুতে।
তুমি যখন দাঁড়াও গ্রীল ধরে তোমার
কষ্টের মনোভূমিতে কিংবা
যখন তুমি চাও নির্লিপ্ত ভঙ্গীতে
নরম কোমল দুচোখের পাতা তুলে
পাড় ভাঙা সমুদ্রের গর্জন শোনা যায় ,
লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় চারদিক
কালবোশেখীর তাণ্ডবে !
আর কেঁদোনা মেয়ে অমন করে কক্ষনো ,
রচনা করোনা তুমি আর অমন
দুঃখী নিঃশব্দের কবিতা।
একবার হাসো যদি
আমিও নির্বাসনে দিতে পারি আমার
সমস্ত ক্লেদ আর কষ্টের নীল শিখাগুলো।
একবার তাকাও যদি
হাস্যোজ্জ্বল চোখের তারায়
বাগান বিলাসী পূষ্পের সৌরভে
দ্বিধাহীনভাবে উৎসর্গ করতে পারি
আমার কবিতাগুলো তোমার তরে ,
শব্দের পাঁপড়িগুলো খুলে খুলে রাখতে
পারি তোমার পায়ের পাতায় নিঃসঙ্কোচে।
এই দেখ, চেয়েই দেখ শুধু একবার
কেমন দাঁড়িয়ে আছি ঠাঁই
তোমার কষ্টগুলো শুষে নেবার প্রতীক্ষায় !