কবিতার জন্য আঁতলামো
কবিতার জন্য আঁতলামো – প্রদীপ বালা
আমার কবিতা পুড়ে মরুক
পুড়ে মরুক সূর্যের আগুনে
আর ছাই হয়ে উড়ে বেড়াক আকাশে বাতাসে
আমার কবিতা ছিন্ন ভিন্ন হোক
ছিন্ন ভিন্ন হোক গ্রেনেডের আঘাতে
আরডিএক্স এর আঘাতে
আর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাক ফুটপাতে
আমার কবিতা ঝাঁঝরা হয়ে যাক
ঝাঁঝরা হয়ে যাক সীমান্তের গোলাগুলিতে
আর ঝুলে থাকুক কাঁটাতারে
আমার কবিতা ধর্ষিতা হোক
ধর্ষিতা হোক মৌলবাদীদের হাতে
আর কড়িকাঠ থেকে ঝুলে পড়ুক পরদিন
আমার কবিতা পিষে যাক
পিষে যাক তোমাদের বুটের তলায়
আর পিচ হয়ে মিশে যাক রাস্তায়
আমার কবিতা ভিজে যাক
ভিজে যাক হুইস্কি আর শ্যাম্পেনে
আর বিবস্ত্রা হয়ে থাক সমস্ত বারে
আমার কবিতা ডাস্টবিনে পড়ে থাক
ডাস্টবিনে পড়ে থাক বাদাম ভাজা আর চানাচুরের ঠোঙা হয়ে
আর ঘেন্নায় কুঁচকে যাক তোমাদের নাক
তোমাদের বৈভব মারবেলে মোড়া ফ্ল্যাট
ঝাঁচকচকে গাড়ি মসৃণ জীবন
আমি পরোয়া করিনা
তোমাদের দশটা পাঁচটা পাঁচটা দশটা
অফিসে বারে ভদ্রতার মুখোশ পরা জীবন
আমি পরোয়া করিনা
তোমাদের দেখেও না দেখার ভান
রক্তচক্ষু আর তাচ্ছিল্যভরে তাকানো
আমি কিছুই পরোয়া করিনা
তবু আমি থামতে পারিনা
পার্কসার্কাস মেটিয়াবুরুজে যে ছেলেটা হাঁ করে বসে থাকে
একমুঠো ভাতের জন্য
কাজ থেকে ফিরবার পথে যেসব মেয়েরা
পেটে একরাশ খিদে নিয়ে অন্ধকার ময়দানে গিয়ে দাঁড়ায়
পুরুলিয়া বাঁকুড়ায় যে ছেলেটা রাইফেল ধরে বসে থাকে
আর সিস্টেম বদলানোর স্বপ্ন দ্যাখে
–শুধু তাদের জন্য
শুধু তাদের জন্য
আমি কলম ফেলেদিতে পারিনা।