আলাপন-৩৩
– অমি রেজা
আচ্ছা মায়া, আমি যদি হঠাৎ করে মরে যাই,তখন তুমি কি করবে?
আচমকা হাজার ভোল্টের শক্ লাগে মায়া’র বুকে।
নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,মিঃ ৩৩০ কি.মি.হঠাৎ করে মরে যাওয়ার শখ হল কেন?
না এমনি বললাম। শুনতে চেয়েছিলাম,তুমি কি বলো।
শুনবে?
হুওওও।
প্রথমে আমি এই চন্দ্রনাথ পাহাড়ে আসব।
আমাদের এই ঐতিহাসিক বসার জায়গাটায় চুপটি করে বসে থাকবো।
তোমার কথা ভাববো,চোখ বুজে তোমার শরীরে র বুনো গন্ধ নিব।
তারপর।
আমি কিন্ত এক ফোঁটা চোখের জল ফেলব না “অমিত”।
আমি জানি।
শূন্যে হাত মেলে দিব,,,,,
তোমার হাত ধরব পরম নির্ভরতায়। তারপর উঠতে থাকবো চন্দ্রনাথ পাহাড়ের
চূড়া য়।
তারপর।
তোমার সেই প্রিয় রবীন্দ্র সংগীত টি গাইব —
“কতবার ভেবেছিনু
আপনা ভুলিয়া
তোমার চরণে দিব
হৃদয় খুলিয়া।
চরণে ধরিয়া তব
কহিব প্রকাশি
গেপনে তোমারে,সখা,
কত ভালোবাসি”।।
তারপর।
চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়া য় যখন পৌঁছাবো,তখন তোমার হাত ছেড়ে দিব।
কেন মায়া?
কারন, পাহাড়ের চূড়া থেকে দুহাত ছড়িয়ে দিয়ে আমি আকাশ দেখব।
ধবধবে সাদা আকাশ,মেঘেদের ছুটাছুটি,
প্রান ভরে নিশ্বাস নিব।
তারপর।
একবার পাহাড় চূড়া থেকে নীচে দেখব।
এরপর দুইহাত ছড়িয়ে দিয়ে আমি পাখি হব। পাখির মত ডানা মেলে উড়ে যাব
ঐ সুনীল আকাশ এ।
মায়া,,,,,,থামো থামো।
সে কি অমিত? তুমি ঘেমে গেছ।
একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে অমিতের বুক চীরে।
মায়া তুমি খুব স্বার্থপর।
এ কথা কেন বলছ?
তুমি,আমি দু’জনে চলে গেলে
পৃথিবী যে ভালোবাসা শূণ্য হয়ে পড়বে।
তুমি বেঁচে থেকো মায়া,আমার স্বপ্ন গুলি নিয়ে।
তুমি বেঁচে থেকো মায়া,
তোমার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজব।
তোমার চোখের আলোয় আমি,আবার এই পৃথবী কে দেখব।তোমার কিন্নরী কন্ঠে
রবীন্দ্রনাথ এর গান শুনব।
তোমার অসমাপ্ত ভালোবাসার দীর্ঘশ্বাস লুকিয়ে,
আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে দিব, সকল প্রেমিক হৃদয়ে।
অমিত!!
“মায়া” লুটিয়ে পড়ে অমিতে’র বুকে।